নিজস্ব প্রতিনিধি
ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামের আবদুল খালেক এর পুত্র মোঃ হানিফ ভূঁঞা (৪০) সাথে দিলরুবা আক্তার (৩০) বিয়ে হয়েছিল ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ১২ বছর সংসার জীবনে তানজিলা তাবাচ্ছুম মাহি (১১) এক মেয়ে আর তানভীর আল আনাছ (৬) বছরের ছেলের মা দিলরুবা। তাদের সুখের সংসারে চলছিল, সংসার জীবনে ছয়-সাত বছর যেতে না যেতেই অবর্ণনীয় নির্যাতন শুরু হয় তার উপর।নেপথের কারণ পরকীয়া, তার স্বামী মোঃ হানিফ ভুঁঞা (৪০) এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছেন।এর পর থেকে শুরু হয় সংসারের অশান্তি।স্বামীর এই পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে একমাত্র বাধা হয়ে দাড়ায় দিলরুবা আক্তার।যে কারণে নানা ছুতোয় মারধর ও নির্যাতন চলে তার উপর। এমন কি হত্যার হুমকিও পান সেই হানিফের কাছ থেকে। গত নভেম্বর ফেনী সদর থানায় হানিফের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দিলরুবা।ফেনী মডেল থানায় মামলা নং ০৬ ০২ নভেম্বর ২০২২, মামলার পর গ্রেফতার হন মোঃ হানিফ ভূঁঞা, এক মাস জেল খাটে বেরিয়ে এসে দিলরুবাকে মারতে আর ও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি।প্রাণ বাঁচাতে দিলরুবা কখনো মায়ের বাসায়,কখনো মামাদের বাসায়, আবার কখনো চাচার বাসায় আশ্রয়ে থাকছেন।তার আদরের মেয়েটির ঠাঁই হয়েছে ফেনীর একটি এতিম খানায়।আর ছেলেটিকে সঙ্গে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।এ প্রতিবেদকের কাছে দিলরুবা আক্তার তার উপর নির্যাতনের এ সব বর্ণনা দেন, এখন তার ঠাঁই হয়েছে ঢাকায় রূপনগরের একটি বাড়ির চিলেকোঠায়। এটি তার এক চাচার বাড়ি।চাচা সপরিবারে থাকেন কানাডায়।এখন ভাতিজির প্রাণ রক্ষার জন্য আশ্রয় দিয়েছেন। প্রবাসী চাচাও বুঝতে পারছেন না ভাতিজিকে কি ভাবে প্রাণে বাঁচাবেন। দিলরুবা আক্তার তার নিজের উপর নির্যাতনের কথা জানিয়ে বলেন, তার বাবার বাড়ি ও একই ইউনিয়ন এর যাত্রাসিদ্ধি গ্রামে।তার স্বামী হানিফ ভুঁঞা ফেনীতে আকাশ ইন্টারন্যাশনাল নামে ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা আছে। দিলরুবা বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে ব্যবসা শুরু করেন হানিফ। কিছুদিন পর একই এলাকার সৌদি প্রবাসী মনজুর সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে হানিফের। এক পর্যায়ে মনজুর স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন হানিফ। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ালে দিলরুবার ওপর শুরু হয় নির্যাতন।সর্বশেষ ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তাকে বেধড়ক মারপিট করেন হানিফ।আহতাবস্থায় গত ৫ অক্টোবর তাকে ফেনীর মেডিনোভা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২০ অক্টোবর দিলরুবার ওপর ফের হামলা করেন হানিফ। এ ঘটনায় গত ২ নভেম্বর ফেনী সদর থানায় মামলা করেছেন দিলরুবা।মামলার বিষয়টি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে দিলরুবার কাছে তালাকের নোটিস পাঠান হানিফ। একই সঙ্গে তাকে প্রাণ নাশের নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। প্রাণভয়ে দিলরুবা এখন আত্মীয়- স্বজনদের বাসায় বাসায় পালিয়ে থাকছেন।
Leave a Reply