★ ২০২২সালে ৫৩৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হলেও বর্তমানে সেটি দাঁড়িয়ে ৩হাজার ৫০ হেক্টরে। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল যেন হলুদের রাজ্য। ৩ বছরের ব্যবধানের বেড়েছে ছয় গুন।
আলমগীর হোসেনঃ
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সরিষার ফুল দৃষ্টি কুড়াচ্ছে সবার। এ যেন এক হলুদের রাজ্য। ২০২২সালে ৫৩৫হেক্টর জমিতে সরিষ চাষ হলেও দুই বছর পেরিয়ে ২০২৫সালে সেটি ৬গুন বেড়ে ৩হাজার৫০হেক্টরে দাড়িয়েছে। যার ফলে কৃষি জমির দিকে তাকালেই দেখা মেলে শুধু হলুদ আর হলুদের।উপজেলায় এবার ৩হাজার ৫০হেক্টরে সরিষা চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। সেটির প্রায় অর্জনও হয়েছে। উপজেলার সবচেয়ে বেশী সরিষার চাষ হচ্ছে উপজেলার চরদরবেশ, চরচান্দিয়া ও আমিরাবাদ ইউনিয়নে।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, চর মজলিশপুরের ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর ৮২ চর লক্ষীগঞ্জে ব্লকে ৮০ এবং মজলিশপুর ব্লকে ৭৫হেক্টর সহ ২৩৭ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে। বগাদানা ইউনিয়নের মান্দারী ৯৬, বগাদানা ৯০, পাইকপাড়া ৯৬, মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের মঙ্গলকান্দি ৯০, মির্জাপুর ৯৫, লক্ষীপুর ৯০, মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া ৯৫, পালগিরি ৯৫, সুলাখালী ৯০, চরদরবেশের উত্তর চর সাহাভিখারী১৫০ দক্ষিণ চর সাহাভিখারী ১৬০,, চরদরবেশ ১৪০, চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মহেশ্বর ১৬৫, দক্ষিণ চরচান্দিয়া ১৮৫, চরচান্দিয়া ২৮৯, সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের ছাড়াইত কান্দি ৯০, সুজাপুর ১০৫, চরখোয়াজ ৯০, আমিরাবাদের সফরপুর১০২, সোনাপুর ১০৫, চর কৃষ্ণজয় ৮৭, নবাবপুর ইউনিয়নে নাজিরপুর ৯৫, সুলতানপুর ৮৭, নবাবপুর ৮২, এবং পৌরসভায় ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে।কৃষকরা এবারো ভালো ফলনের আশা দেখছেন। প্রতি হেক্টরে ১৪শত কেজি সরিষা ফলন হবে। যাতে ব্যয়ের কয়েকগুন লাভবান হবে চাষীরা।সরিষা চাষী কামাল উদ্দিন বলেন, আমদের প্রতি ১০০কেজি সরিষা থেকে ৪০-৪৪ লিটার তেল এবং বাকী গুলো খৈল পাওয়া যায়। সরিষার গাছ গুলোও শুকিয়ে জ্বালানির কাজে ব্যবহার করা যায়৷ পাশাপাশি ফলনের সময় কম এবং সৌন্দর্য বহুগুন বাড়ে। তাই আমরা সরিষা চাষের দিকে একটু বেশীই আগ্রহ দেখাই।সদর ইউনিয়নের আবু সাঈদ রুবেল বলেন, গত বছর ২৫ হেক্টরে সরিষা চাষ করেছি। প্রতি হেক্টরের আমার উৎপাদন হয়েছে ১লাখ ৪২হাজার টাকার সরিষা। এখানে প্রতি হেক্টরের ব্যয় হয়েছে ৪৩হাজার টাকা। প্রতি হেক্টরে আমার লাভ হয়েছে ৯৯হাজার টাকা। এবছর ফলন আরো ভালো হয়েছে।
উপজেলা উপ সহাকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র দাস জানান, আমরা যদি ২০২২সালের হিসেব বলি মাত্র ৫৩৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়ে তারপরের বছর এর দ্বিগুন হয়ে ১১৩০হেক্টর জমিতে, ২০২৪ অর্থ বছরে তার ৩গুন এবং ২০২৫ সালে বেড়ে ৩হাজার ৫০হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। কৃষকরা লাভবান না হলে তারা চাষে এতো আগ্রহী হতো না।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন বলেন, উপজেলার কৃষক গুলোর এ মৌসুমে সরিষা চাষই প্রথম পছন্দ। তাই তারা সরিষা চাষে এতো আগ্রহী হয়েছে যা মাঠ দেখলেই বুঝা যায়। গত বছর গুলোর তুলনায় এবার ভালোই লাভবান হবে সরিষা চাষীরা। আমরাও তাদের যেকোনো প্রয়োজনে পরামর্শ ও পাশে থাকার চেষ্টা করে আসছি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, সোনাগাজীর প্রত্যন্ত এলাকা যেন হলুদের রাজ্য। সাথে অসাধারণ একটা গ্রাণ উপলব্ধি করা যায়। যুবকের কৃষিতে আগমনে কৃষির বিপ্লব ঘটছে। অন্যান্য ফসলের মত সরিষা চাষেও ব্যাপক সফলতা পাচ্ছে কৃষকরা। সরকারী পক্ষ থেকেও তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Leave a Reply