নিজস্ব প্রতিনিধি
ফেনী পৌর এলাকার ১৮ টি ওয়ার্ড এর মধ্যে ১৭ টি ওয়ার্ড চলে এক নিয়মে। কিন্তু একটি মাত্র ওয়ার্ড ১৬ সেটি চলে অন্য নিয়মে।এই ওয়ার্ডটি চলে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় যাদের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে অনেকটা অসহায় এখানে বসবাসরত সাধারণ নাগরিকরা। ফেনীকে বলা হয় শান্তির জনপদ তবে কেন ফেনীর রামপুর পুলিশ কোয়াটারে এত অশান্তি।কেন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা এখানকার ছাত্রলীগ,যুবলীগ নেতাদের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না।স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন তারা কি প্রভাবশালী নেতাদের থেকেও প্রভাবশালী।গত ২৯ নবেম্বর (বুধবার) রাতে পুরাতন পুলিশ কোয়ার্টার এলাকায় যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।গত বুধবার রাতে এ ঘটনায় মানিক নামে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে ভর্তি হয়েছেন ফেনী সদর হাসপাতালে। স্থানীয় যুবলীগ নেতাদের দাবি কিছুদিন আগে ফেনীর ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁয় ঘটে যাওয়া ঘটনায় অন্যতম আসামি সাব্বির কারাগার থেকে বের হয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে এই হামলা চালিয়েছে।পুরাতন পুলিশ কোয়াটার এলাকায় ছাত্রলীগ যুবলীগ এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে তাদের চাঁদা বাণিজ্য থেকে রেহাই পাচ্ছেনা, স্থানীয় ব্যবসায়ী, প্রবাসী সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।ছাত্রলীগের চাঁদা বানিজ্যের শিকার ফেনী শাহিন একাডেমি স্কুলের শিক্ষক আবু তৈয়ব জানান, কিছুদিন আগে তিনি স্কুল থেকে ফেনী ট্রাংকরোড় যাওয়ার সময় ১৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কিছু কর্মী শহরের এসি মার্কটের আন্ডার গ্রাউন্ডে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র ও বোমা দিয়ে মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে তার কাছ থেকে।এ ঘটনার পর তিনি মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়েছেন।এছাড়াও এই এলাকাটি আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারপিট,ইভটিজিং,মাদকের রমরমা বাণিজ্যের এক নিরাপদ অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও এক শিক্ষক জানায় চাঁদা না দিলে তাকে আসতে দেওয়া হবে না বিদ্যালয়ে পড়াতে দেওয়া হবে না প্রাইভেট, এমনটা বলে হুমকি দিয়েছে ওয়ার্ড ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতা।এবিষয়ে ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমির হোসেন বাহার জানান, শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। যদি শিক্ষকদের সাথে এ ধরনের কোন কিছু ঘটে থাকে তবে যারা করেছে তাদেরকে এক বিন্দু পরিমাণও ছাড় দেওয়া হবে না।ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ জানান,ছাত্রলীগ কখনো নীতিবহির্ভূত কাজকে সমর্থন করে না।যারা ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে এসব অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।শহিন একাডেমি স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন,বর্তমানে আমরা শিক্ষকরা অনেকটা অসহায়।ছাত্রলীগ যুবলীগের নামধারী কিছু কর্মী সমর্থক আমাদের শিক্ষকদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক।আমরা সকল শিক্ষক ফেনীর অভিভাবক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীর কাছে এর প্রতিকার চাই।ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান,বুধবার রাতে ফেনী রামপুরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে। পুলিশ অভিযোগ দুটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।বর্তমানে রামপুর এলাকায় পরিস্থিতি স্থিতিশীল জনজীবন স্বাভাবিক রয়েছে।
Leave a Reply